আপনার লেখা গল্প কিংবা কবিতাটি পোস্ট করুন এখানে। মেসেজ বক্সে লেখার শিরোনাম, লেখকের নামসহ লিখা দিন।

Name

Email *

Message *

মা এক অনুভূতি

( 'মা ' এক অনুভূতি )
--পলাশ মন্ডল ।
আচ্ছা, এমন যদি হত ?
সবার মা'কেই দেখতে হত আমার মায়ের মত ?

একই শাড়ি, একই চুড়ি, একই চোখের চাওয়া !
একই সুরে ঘুম পাড়ানির একই সে গান গাওয়া !

কেমন মজা হত বল, হাজার বাড়ির দাওয়ায়
আমার মায়ের উড়ত শাড়ি হাজার বাড়ির হাওয়ায় !

সন্ধ্যেবেলা ঠাকুরঘরে প্রদীপদানীর পরে,
আমার মায়ের জ্বলত প্রদীপ সবার মায়ের ঘরে !

সবার মায়ের দুলত কানে আমার মায়ের দুল,
খোঁপায় তাদের উঠত ফুটে কনকচাঁপার ফুল !

কিন্তু কোনো দিনে ধরো উল্টো রথের মেলায়
মা যদি মোর হারিয়ে যায় ঝড় বাদলের বেলায় ?

কেমন করে খুঁজবো বল সবার মায়ের মাঝে ?
আমার মা যে ছড়িয়ে আছে হাজার মায়ের সাজে ।

তখন আমার কান্না দেখে আসল মায়ের ছলে
নকল মা'রাই আসতো বুঝি আমায় নিতে কোলে ।

আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিত আমার চোখের জল ।
কান্না কি মোর মুছতো তাতে, বল দেখি কেউ বল ?

এত মায়ের মাঝেও আমার মুখটি দেখে ভার
আসল মা মোর লুকিয়ে তখন থাকত কি গো আর ?

বলতো এসে মধুর হেসে আমায় নিয়ে কোলে,
"হারিয়ে শুধুই গেছি আমি, গেছি কি আর চলে ?"

আমি বলতাম, "হারিও তবে আমায় নিয়ে সাথে,
তোমার আঁচল রইল বাঁধা তোমার খোকার হাতে ।"

মা বলতো, "পাগল ছেলে, তাই কখনো হয় ?
হাজার মায়ের হাজার আঁচল তোমার জীবনময় ।

কারও আঁচল অনেক দামী সোনার সুতোয় মোড়া,
কারও হয়তো একটু মলিন, একটুখানি ছেঁড়া ।

কিন্তু জেনো, সব আঁচলই সমান স্নেহ মাখা,
তোমার মায়ের আঁচল থাকুক তাঁদের কাছেও রাখা ।

ঝড়বাদলের জীবনটা এক উল্টো রথের মেলা,
সেথায় আছে কান্না হাসি, লুকোচুরির খেলা,

সেথায় আছে হারিয়ে ফেলেও ফিরে পাওয়ার মজা,
সেথায় আছে পেয়েও আবার নতুন করে খোঁজা ।

মায়ের সাথে এমন খেলায় নেই যে কারও হার,
মধ্যে আছে অনুভবের সহজ পারাপার ।

মা শুধু নয় স্নেহের মায়ায় ভুলিয়ে রাখার সাথী,
জীবন মরণ সব ছাড়িয়ে 'মা' এক অনুভূতি।"

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

কিছু একই থাকে

( কিছু একই থাকে )
--পলাশ মন্ডল ।
কিছু রাত চোখে কান্না ভরায়,
কিছু রাত চোখে স্বপ্ন আঁকে,
কিছু রাত চোখে অশ্রু ঝরায়,
কিছু রাত চোখে কুয়াশা মাখে ।
রাতগুলি শুধু পাল্টায়, আর
চোখদুটি সেই একই থাকে ।

কিছু ফুল ফোটে ফুল বাগিচায়,
স্নিগ্ধ সবুজ পাতার ফাঁকে ।
কিছু ফুল ফোটে রাতের তারায়,
কিছু ফুল ফোটে মনের শাখে ।
ফুলগুলি শুধু রং বদলায়,
সুগন্ধ তার একই থাকে ।

কিছু মুখে থাকে সুখের আদর,
কিছু মুখ থাকে মায়ায় গড়া ।
কিছু মুখে ঝরে জ্যোৎস্না অঝোর,
কিছু মুখে থাকে ছলনা ভরা ।
কিছু মুখ এসে সামনে দাঁড়ায়,
কিছু মুখ শুধু আড়ালে থাকে ।
বেদনা লুকাতে কিছু মুখ তাই
রঙিন মুখোশ সাজিয়ে রাখে ।
মুখের মুখোশ আলাদা হলেও
মুখগুলি সেই একই থাকে ।

কিছু পথ চলে দূর অজানায়,
কিছু পথ মেশে পথের বাকে ।
কিছু পথ শুধু পাশে থেকে যায়,
ব্যবধানটুকু আলাদা রাখে ।
পথগুলি শুধু ভিন্ন, যদিও
পথের নিশানা একই থাকে ।

কিছু সুখ ভাসে মনের আকাশে,
কিছু সুখে মন ভেসে চলে যায় ।
দুঃখের রাতেও বাতায়ন পাশে
কিছু সুখ এসে হাতটি বাড়ায় ।
সুখের ঠিকানা ভিন্ন হলেও
অনুভবটুকু একই থাকে ।

কিছু প্রেম বোঝে মনের ভাষা,
কিছু প্রেম শুধু স্বার্থ বোঝে,
কিছু প্রেম মনে জাগায় আশা,
কিছু প্রেমে মন মৃত্যু খোঁজে ।
প্রেমগুলি শুধু ভিন্ন, যদিও
মনগুলি সেই একই থাকে ।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

দারুন ছেলে

( দারুন ছেলে )
--পলাশ মন্ডল ।
২৬/২/২০২০
সেদিন দেখি পুবের পাড়ার
ষষ্ঠীচরণ রায়
গাঁয়ের পথে কোথায় যেন
ছুটছে খালি পায়ে ।

"যাচ্ছো কোথায় হনহনিয়ে ?
দিচ্ছো নাকি মেয়ের বিয়ে ?
মেয়েটি তোমার মিষ্টি অতি ;
দেখতে শুনতে লক্ষীমতি ;
বিদ্যে গুনেও সরস্বতী ।
মেয়ের যেমন তুলনা নাই,
তেমন কিন্তু ছেলেটি চাই ।
মদ, জুয়ো, ভাং, গাঁজাখোরে
সমাজ এখন গেছে ভরে ।
চোর, লম্পট, দামড়া, গোঁয়ার -
দেশটি যেন ষাঁড়ের খোয়াড় ।
তা , বলো না , ছেলে কেমন ?
উঁহু , চলবেনাকো যেমন তেমন ।
হোক না বাঙাল , হোক না ঘটি ,
বাজিয়ে নিয়ো চরিত্রটি ।
চুপটি করে বলছি শোনো ,
খোঁজ নিতে নেই লজ্জা কোনো ;
দু'চার খানা লোক লাগিও ,
একান ওকান খবর নিও ।"

ষষ্ঠীচরণ বললো ক্ষেপে ,
"যাও তো নিজের পথটি মেপে ।
গায়ে পড়ে জ্ঞান দিও না ।
ছেলে তো নয়, কাঁচা সোনা ।
এমন জবর খাসা ছেলে
হাজারটিতে একটি মেলে ।
নয় সে বলদ , নয় সে বেকার ;
লোকাল ট্রেনের টিকিট চেকার ।
ঊনিশ হাজার মাসিক বেতন ;
থাকবে মেয়ে রানীর মতন ।
চাগরি করে পূর্ব রেলে ।
দারুন ছেলে , দারুন ছেলে !"

"তাই নাকি ? তা , দিচ্ছো কি কি ?
ষোলো আনায় আঠারো সিকি ?"

চোখ নাচিয়ে একটু কেশে,
ষষ্ঠীচরণ বললে এসে
ফিসফিসিয়ে কানের কাছে,
"দেখলে হবে ? খচ্চা আছে ।
গয়না, টিভি, ফ্রিজ, ঘড়ি,
ফার্নিচারও কয়েক লরি ।
ক্যাশের কথাও পাকাপাকি ;
দু'লাখ নগদ, দু'লাখ বাকি ।
কি করবো ভাই, এমন ছেলে,
হাতের থেকে ফসকে গেলে ?
আগুন এখন ছেলের বাজার ।
গাঁটের দিকে তাকাইনি আর ।
চাগরি করে পূর্ব রেলে,
আহা, দারুন ছেলে, দারুন ছেলে !"

দিন, মাস যায়, বছর গড়ায় ;
মেয়েটি এখন উনুন ধরায়
শুকনো পাতায়, ভেজা কাঠে ;
বাসন মাজে, বাটনা বাটে ।
পান থেকে চুন খসলে পরে
শাশুড়ি ননদ খামচে ধরে ।

আর এক আছে ঢ্যামনা শশুর ;
পাকনা চুলে জ্যান্ত অসুর ।
চানের ঘরের বেড়ার ফাঁকে
কুতকুতিয়ে তাকিয়ে থাকে ।
একটু কিছু বললে তারে
নোংরা কাঁচা খিস্তি মারে ।

চেকার বাবু ব্যস্ত বেজায় ;
সাড়ে দশটায় ডিউটিতে যায় ।
সন্ধ্যেবেলা ডিউটি সেরে
ছ'টার ট্রেনে বাড়ি ফেরে ।
নাকে মুখে চারটি গুঁজে
বেরিয়ে পরে সুযোগ বুঝে ।
চাঁদবাজারের রাস্তা ধরে
ভ্যাঁপসা গলির অন্ধকারে
আস্তে ধীরে পা বাড়িয়ে
কোথায় যেন যায় হারিয়ে ।

ময়লা কি যায় কয়লা ঘষে ?
নোংরামি আর আলুর দোষে
পরকীয়ায় দু'বার ফেঁসে
টাকার জোরে গেছে বেঁচে ।
ভাগ্য ভালো দেয়নি জেলে ;
কারণ সে যে দারুন ছেলে ।

বাড়ি ফেরে রাত্রি ন'টায় ;
দু'চারখানা সঙ্গী জোটায় ;
তাস পিটিয়ে জুয়ো খেলে ;
ঢুকুর ঢুকুর বাংলা গেলে ।
জমিয়ে বসে মদের আসর ।
মেয়েটি সাজায় দুঃখের বাসর ।
অশ্রুচোখে একলা ঘরে
কখন যেন ঘুমিয়ে পরে ।
মাতাল বরের লাথির চোটে
রাত দুপুরে চেঁচিয়ে ওঠে ।
তিরিশ হাজার জুয়োয় হেরে
ঝালটি মেটায় বৌকে মেরে ।
ধাক্কা মেরে জাগায় ঠেলে ;
লাগায় ঝাঁটা মেঝেয় ফেলে ।
"লক্ষীছাড়ি, বদের হাড়ি -
খবর দিবি বাপের বাড়ি ।
বাকির দু'লাখ কাল না পেলে
ভাজবো তোকে গরম তেলে ।"

কাল চলে যায়, পরশু আসে ।
বাপ আসে না, খবর আসে ।
লক্ষ পাঁচেক দেনার চাপে
গলায় দড়ি দিয়েছে বাপে।
এমন সুখের খবর পেয়ে
ষষ্ঠী রায়ের সোনার মেয়ে
কেরোসিনের বোতল ঢেলে
সারা গায়ে আগুন জ্বেলে
চললো তখন বাপের কাছে ।
যেথায় অনেক শান্তি আছে ।
যেথায় অনেক শান্তি আছে ।

বাপ মেয়ে তো বাঁচলো মরে ;
চেকার বাবু কি আর করে ;
হাজার দশেক টাকা দিয়ে
গাঁয়ের লোকের মুখ বুজিয়ে
কায়দা করে গল্প সাজায় -
বৌ মরেছে দুর্ঘটনায় ।
পুরুত আসে, মন্ত্র পড়ে,
ঘটা করে শ্রাদ্ধ করে ।

গলদা চিংড়ি, কাতলা কষা,
দই ইলিশ আর পাবদা রসা ।
মন্ডা মিঠাই থরে থরে,
সবাই খেলো তৃপ্তি ভরে ।
বললো সবাই, এমন ছেলে
লক্ষটিতে একটি মেলে ।
সমাজ তখন চেঁচিয়ে বলে,
"দারুন ছেলে, দারুন ছেলে ।"
অন্ধ সমাজ চেঁচিয়ে বলে,
"দারুন ছেলে, দারুন ছেলে ।"
ভন্ড সমাজ চেঁচিয়ে বলে,
"দারুন ছেলে, দারুন ছেলে ।"

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

ভালোবাসা এক সীমাহীন মহাকাশ

( ভালোবাসা এক সীমাহীন মহাকাশ )
--পলাশ মন্ডল ।
২৫/২/২০২০
কেউ যদি হয় অধরা অচিন মায়া,
হোক সে পাষান, হোক সে হৃদয়হীন ।
দাও যদি কিছু হৃদয় উজাড় করে,
সে দান তোমার রবে জেনো চিরদিন ।

যে ফুল তোমার ফিরায় সে ঘৃণাছলে,
ব্যাথার রক্তে করো'না হৃদয় রাঙা ।
তোমার সে ফুল ঘৃণার ছিলনা জেনো,
শুধু ছিল তার ফুলদানিটাই ভাঙ্গা ।

যার তরে তুমি পথপানে চেয়ে কাঁদো,
তার পথ বাঁধা অন্য পথের বাকে ।
হৃদয়ের পথে প্রেমটুকু শুধু বাঁধো,
জীবনের পথে কখনো বেঁধো না তাকে ।

ভালোবাসা এক সীমাহীন মহাকাশ,
জীবনের পথ তারও চেয়ে নয় বড় ।
জীবনের পথে হোক সে অচেনা পর,
ভালবেসে তারে হৃদয়ে আপন করো ।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

ইচ্ছে ডানা

( ইচ্ছে ডানা )
--পলাশ মন্ডল ।
২৩/২/২০২০
মা যদি হও আমার সকালবেলা,
তোমার সকাল সাজিয়ে দেব ফুলে ।
সোনার আলোয় ভাসিয়ে মেঘের ভেলা,
ভিড়বো তোমার স্নেহনদীর কূলে ।

মা যদি হও শঙ্খবালুর চর,
সারস হয়ে উড়ব তোমার বুকে ।
ঝিনুক নুড়ির গড়ব খেলাঘর,
সারাটি দিন থাকব সেথায় সুখে ।

মা যদি হও দীঘির কালো জল,
রোজ সকালে ফুটব হয়ে-
রঙিন শতদল ।

মা যদি দাও আশা,
তোমার প্রথম পাঠশালাতে
শিখব তোমার ভাষা ।
মা যদি হও শ্রোতা,
সারাটিক্ষণ তোমার কাছে
কইবো মনের কথা ।

মা যদি হও আমার পূজার ঘর,
প্রদীপ হয়ে জ্বলব সেথায়
সারা জনমভর ।
মা যদি হও আমার পূজার ফুল,
আশীর্বাদের পাপড়ি নিয়ে
পরব কানের দুল ।

মা যদি হও স্নিগ্ধ বটের ছায়া,
রাখাল হয়ে থাকব, মনে
মাখবো তোমার মায়া ।
মা যদি হও সুর,
রাখালরাজের বাঁশি হয়ে বাজব সুমধুর ।

মা যদি হও দূর আকাশের নীল,
আমি হবো শঙ্খডানা চিল ।
তোমার আশীর্বাদের আলোয়
উড়বো অনাবিল ।

দাও মা যদি আড়ি,
অনুভবের গোপন ঘরে
লুকিয়ে দেব পারি ।
মা যদি দাও ব্যথা,
ভাবছ কি মা, বলবো না আর কথা?
মান ভাঙানির গান শুনিয়ে
ভাঙব নীরবতা ।

মা যদি হও চাঁদ,
জ্যোৎস্না হয়ে থাকবো সাথে,
জাগব সারারাত ।

মা যদি গাও ঘুম পাড়ানির গান,
আধেক ঘুমেও থাকব পেতে কান ।
হও যদি মা ঘুমের দেশের পরী,
দিনের শেষে স্বপন দেশে
ভিড়াবো মোর তরী ।

খুশির রঙে সাজিয়ে দেব
তোমার স্বপ্নলোক ।
মা-ছেলের এই ভালবাসা
স্বপ্নে সফল হোক ।।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

( নদীটি অনেক সুন্দর ) -- পলাশ মন্ডল ।

( নদীটি অনেক সুন্দর )
-- পলাশ মন্ডল ।
১৭/২/২০
নদীটি অনেক সুন্দর,
মাঝে বালুচর ঝিকমিক,
দুকূলে সবুজ প্রান্তর,
মেঘনীলে ঘেরা চারিদিক ।

নদীটি অনেক সুন্দর,
জলরঙে আঁকা দূরগ্রাম,
সকাল রাত্রি দিনভর,
বয়ে চলে নদী অবিরাম ।

কত ঝাউবন, তালগাছ সারি
দুই দিকে সরে সরে যায় ।
কলসিতে লয়ে তৃষ্ণার বারি
কত নারী কত ঘরে যায় !

ডান পাড়ে রেখে ডাহুকের মাঠ,
ভুতুম চরের বাঁশঝাড় ।
বাঁয়ে ফেলে বুড়োশিবতলা ঘাট
বয়ে যায় নদী অনিবার ।

চাষী কাটে ধান, জেলে জাল পাতে
মাঝি গান গায় ভাটিয়াল ।
ঘরছাড়া উড়োমেঘেদের সাথে
নদী বয়ে চলে উত্তাল ।

সারাটি সকাল, সন্ধ্যা, দুপুর
খেয়া বেয়ে মাঝি ক্লান্ত ।
নদীর জীবনে ক্লান্তি যে নেই,
চলে সে অবিশ্রান্ত ।

আঁধার ঘনায়, ক্লান্ত ডানায়
সাঁঝের পাখিরা খোঁজে নীড় ।
মাঠের রাখাল ঘরে ফিরে যায়
সুনসান হয় নদীতীর ।

আকাশের কোলে বাঁকা চাঁদ ওঠে,
জোছনা আলোয় দোলে দুল ।
জোয়ার জলের আরশিতে ফোটে
হাজার তারার নাকফুল ।

এরপর আরও রাত হয়,
পৃথিবী ঘুমায় নিঃসাড় ।
এ নদী তখনও জেগে রয়,
ঘুম যে দুচোখে নেই তার ।

ওগো নদী তুমি কোথা যাও ?
ঠিকানা তোমার কোন গাঁও ?
কোন রমণীর হৃদয় বারতা
কোন পরদেশে কারে দাও ?

কোন সে নারীর দুঃখের রোদন
তোমার দুচোখে উছলায় ?
কার জীবনের না বলা বেদন
তোমার হৃদয়ে ভেসে যায় ?

ক্ষনিক দাঁড়ায়ে বলে যাও নদী
সুখের ঠিকানা কতদূর ?
প্রেমসুধা যেথা বহে নিরবধি,
কোথা সে জীবন মধুপুর ?

নদী বয়ে যায় , পিছনে না চায়,
আকাশে ঘনায় কালো মেঘ ।
দুকূল ভাসায় ঘন বরষায়,
নিশুতি ঝড়ের বাড়ে বেগ ।

কখন যে হয় রাত ভোর !
কাটে সে নিশার ঘনঘোর ।
হৃদয় আকাশে শুকতারা হয়ে
কে যে পিছু ডাকে মনচোর !

নদী যেন বলে, "আমায় ডেকোনা,
চেয়োনা আমায় জানতে ।
আমার ঠিকানা লেখা আছে জানা-
অজানার শেষ প্রান্তে ।

চলার কাব্যে লিখেছি জীবন,
চলারই সুরটি রেখে যাই ।
চলার ছন্দে গেঁথেছি এ মন,
চলারই স্বপ্ন দেখে যাই ।

চলাই দুঃখসুখের বাজারে
শান্তি নামের পণ্য ।
এ জগতে মোরা তাই বারেবারে
আসি যে চলারই জন্য ।

সুধা সাগরের মধুমোহনায়
যে জন যে পথে পথ পাই,
প্রেমের অরূপ অমৃত ধারায়
সে জন সে পথে চলে যাই ।
আপন ছন্দে চলে যাই ।
চলে যাই , শুধু চলে যাই "।।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

গল্পের সাথে অল্প - সুমন সরকার

গল্পের সাথে অল্প

সুমন সরকার

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
গল্পের সাথে অল্প সখ্যতা আমার
সেখানে আবার সখ্যতা তোমার।
লেখার প্রতি আছে দূর্বলতা আমার
সেখানে খোঁজ খবর নেই তোমার।
কবিতা লেখার সঙ্গী কলম আমার
সেখানে কবিতা পাঠে মন তোমার।
লেখার প্রাপ্তিতে আশা নেই আমার
সেখানে উৎসাহ প্রদানে মন তোমার।
আলো আধার পথে চলাচল আমার
সেখানে সঙ্গী হওয়ার ইচ্ছা তোমার।
জীবন গল্পের সাথে বিচরণ আমার
সেখানে চলতে ফিরতে সাধ তোমার।
গল্পের মাঝে থাকো পাশে আমার
যাবে সময় হয়তো ভালো তোমা।

Regards,
M A kabir sumon | anamulkabirsumon06@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

( চৌকাঠেতেই ফাঁক ছিল ) --পলাশ মন্ডল ।

বিভাগ - কবিতা
( চৌকাঠেতেই ফাঁক ছিল )
--পলাশ মন্ডল ।
১৬/২/২০২০
চিলেকোঠার চৌকাঠে এক
মস্তবড় ফাঁক ছিল ।
সেই ফাঁকেতে লেজ বাঁকা এক
কাক ছিল ।

বানিয়ে বাসা কে জানে সে
কবে থেকেই থাকছিল !
হালিখানেক ডিম নিয়ে তা
হুলোর ভয়ে ঢাকছিল ।
দুদিন পরেই মা হবে, তার
স্বপ্ন মনে আঁকছিলো ।

চাতাল তলার পেঁপেগাছে
তিন টি পেঁপে পাকছিলো ।
শালিক-চড়াই না দেখে, তাই
চোখে চোখে রাখছিলো ।

গেট পেরিয়ে একটু দূরেই
চৌরাস্তার বাক ছিল ।
সেখান দিয়ে মিঠাই নিয়ে
ময়রা কাকু হাঁকছিলো ।
কাকুর মাথায় টাক ছিল ।

হলোই বা টাক, বুদ্ধিতে সে
একটু ছেঁড়া-তার ছিল ।
ঝুড়িতে তার মিষ্টি দইয়ের
হরেক রকম ভার ছিল ।
পেছন থেকে ছোকরারা সব
যে যার মতো ঝাড়ছিলো ।
এসব দেখে কাকের মনেও
আশার পারদ চড়ছিলো ।
চার চারটে বাচ্চা পোষার
প্রস্তূতিটা সারছিলো ।

ক'দিন পরেই মা হলো কাক,
বাচ্চা গুলো বাড়ছিল ।
চিলেকোঠার আড়ালটা তে
এক পা, দু'পা হাটছিলো ।
দিনগুলি বেশ কাটছিলো ।

সব কিছু ঠিকঠাক ছিল ।
হঠাৎ সেদিন কি যে হলো,
কাক টা ভীষণ ডাকছিলো ।
পালিয়ে গেছে বাচ্চারা, তাই
মন টা যে খুব ভার ছিল ।
এতক্ষনে হুশ হলো তার,
বাচ্চাগুলো কার ছিল ।

হোকনা ওরা কোকিল, তবু
বুকটা কাকের ফাটছিলো ।
ছাদটা তখন কাকের কাছে
ব্যাথার ধু ধু মাঠ ছিল ।

কাকের মনের চিলেকোঠায়
গভীর শোকের দাগ ছিলো ।
অবশেষে বুঝলো যে, তার
চৌকাঠেতেই ফাঁক ছিল ।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

ধর্ম গুণে গুণান্বিত - রাকিবুল হাসান নয়ন

ধর্ম গুণে গুণান্বিত
রাকিবুল হাসান নয়ন

ধর্ম শিক্ষা বড় শিক্ষা
আলোর বিকিরণ
সদা সত্য পথে ভিক্ষা
প্রভুর সমর্পণ।

ধর্ম গুণে বাড়ে ভক্তি
বিধাতার সমীপে-
এক স্রষ্টা এক শক্তি
কোরআন জরিপে।

কেউ যদি সীমা ছাড়ি
কোরআন বিপক্ষে-
নাহি শান্তি শোভা তারি
যেনো-আসে স্বপক্ষে।

বিধি ধর্মে অবহেলা
আসবে কেয়ামত-
ধ্বংস হবে রঙ্গমেলা
অবৈধ সব পথ।

পৃথিবীতে বিধি মেনে
পরম করুণায়-
সদা সত্য পথ চেনে
প্রভুর দয়া পায়।

আশে-পাশে নবী গুণে
গুণান্বিত যেজন-
আল্লার রহম পুণ্যে
আউলিয়া সেজন।

Regards,
মোঃ রাকিবুল হাসান নয়ন | nayan441066@mail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

( প্রতিবাদী কবি ও লেখক নবারুণ ভট্টাচার্যের স্মৃতির স্মরণে লেখা একটি শ্রদ্ধার্ঘ্য ) :- ( এসো নবারুণ ) --পলাশ মন্ডল ।

( প্রতিবাদী কবি ও লেখক নবারুণ ভট্টাচার্যের
স্মৃতির স্মরণে লেখা একটি শ্রদ্ধার্ঘ্য ) :-
( এসো নবারুণ )
--পলাশ মন্ডল ।

ঊষার আকাশে আবির ছড়ায়ে
প্রতিদিন ওঠে রবি ।
আধো ঘুমচোখে চেয়ে দেখি তার
শান্ত মুখচ্ছবি ।

যে রবি ওঠেনা প্রতিদিন , ওঠে -
শত বছরের পরে ,
ওঠে কৃষক , মজুর , কুলি , ডোম আর
মুচি , মেথরের তরে ।
ওঠে সোনালী দিনের স্বপ্ন সাজায়ে
নির্যাতিতের তরে ।
ওঠে ক্ষুধার্ত আর রুগ্ন, পীড়িত
পথশিশুদের তরে ।
স্মরণ করি সে নবারুনে আজ
পরম শ্রদ্ধাভরে ।

এসো মহীরুহ, এসো মহাপ্রাণ ,
বারবার এসো ফিরে ;
কান্ডারী হতে এই পৃথিবীর
রক্তনদীর তীরে ।
এসো নবারুণ , জ্বালাও তোমার
আধপোড়া সিগারেট ।
দেশলাই হাতে রয়েছে দাঁড়ায়ে
ক্ষুধার্ত শত পেট ।

রাতের মোটরগাড়ি'রা এখনো
এই রাস্তায় ছোটে ।
থকথকে ঘিলুমাখা পথে আজও
রক্তগোলাপ ফোটে ।

তোমার বৃদ্ধ ভিখিরি এখনো
কাঁপে অভিমানে শীতে ।
কম্বল আর দয়ার চাদর
কেউ যে আসেনা দিতে ।

এই মৃত্যুর উপত্যকা যে
তোমারি আপন দেশ ।
ফিরে এসো তার প্রতি ঘরে ঘরে,
হয়নি যে কাজ শেষ ।

ম্যাচ-বাক্সের মানুষেরা আজও
মাথা ঠুকে মরে হায় ।
নিজেদেরই জ্বালা আগুনে এখনো
নিজেরাই জ্বলে যায় ।

পারো যদি কিছু পেট্রোল এনে
ঢালো সে চিতার কাঠে ।
পেট্রোল দিয়ে নেভানো আগুনে
যদি কেউ জেগে ওঠে ?!

তোমার শীর্ণ কাঁধে তুলে নাও
অর্ধমৃতের লাশ ।
দেখো দেখো , কাঁধে না ডোবে সূর্য
না থামে দীর্ঘশ্বাস ।

জীবনে যাদের নিত্য উপোস,
পেটেতে ক্ষুধার বোঝা ।
বারুদ কিছুটা পুরে দিও মুখে,
হররোজ যার রোজা ।

পাঁচতারা যত হোটেলে, কাফেতে
খাদ্যতালিকা ঘেটে
কুকুরেরা খায় আজও গরিবের
রক্ত মাংস চেটে ।
তার সাথে খায় এইড্স চুম্বন
ঘেয়ো কুকুরেরা রোজ ।
গরিবের গড়া ইমারতে বসে
কুকুরের মহাভোজ ।

শূন্য দুধের বোতলে যে আজ,
ভরে গেছে সারাদেশ ।
দোলনা এখনো দুলে চলে একা,
কোথা এ দোলার শেষ ?
লক্ষ শিশুর মৃত্যু দোলনা
দোলে আকাশের গায় ।
এ কোন সুখের মৃত্যু ? শিশুরা -
মরতেই শুধু চায় ?!

তোমার প্রাণের প্রেয়সী এখনো
আত্মহত্যা করে ।
বারে বারে এসে জীবন-বাঁশরী
শোনাও তাহারও তরে ।

ওগো নবারুণ, এসো যুগে যুগে,
এসো ঘরে ঘরে তুমি ।
এ মহাশ্মশান তোমা-ছাড়া আজও
প্রাণহীন প্রেতভূমি ।।

Regards,
Palash Mondal | palashmondalseven@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

স্বাধীনতা তুমি হারালে। সুজন মাহমুদ

স্বাধীনতা তুমি হারালে।
সুজন মাহমুদ

স্কুল কলেজ গার্মেন্টস থেকে নারী হবে বস্রহারা।
এসিড দিবো ছুড়ে শ্রমিকের থালাভরা ভাতে।

কেড়ে নিবো তোমার,
গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা।

রাজনীতিবিদ বুদ্ধিজীবীরা হবে দেশদ্রোহী, ফাঁসির মঞ্চে এনে বিষ প্রয়োগে করিবো
হত্যা।
কবি সাহিত্যিক দার্শনিক সকলেই হবে রাজবন্দী।

সংসদ, অট্টালিকা, মেট্টরেল,
হাতিঝিল একনিমিষে দিবো গুড়িয়ে।

রাজপথ ভাসিয়ে দিবো রক্ত স্রোতে,
সাইক্লোন দিয়ে উড়িয়ে দিবো সুন্দরবন।

দাবানলে দিবো ছাই করে ফসলি মাঠ।
কেড়ে নিবো কৃষকের হাত, ফসল যেনো না ফলে এই মাঠে।
সকলে যেনো অনাহারে আমার চরণ তলে মাথা ঠুকে।

তোমার বায়ান্ন একাত্তরের ইতিহাস দিবো মুছে।

এই মৃত্তিকায় থাকবে না কোন শহীদের রক্তচিহ্ন।
থাকবে না কোন ইতিহাস।
আমি লেখে দিবো তিনকালের ইতিহাস।
আমি শোষক
তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ একশো চুয়াল্লিশ দারা থাকবে অনন্তকাল।

সশস্ত্র বাহিনী আমার একান্ত অনুগত।
কেও আমার বিরুদ্ধে গেলে তারা হবে নির্বাসিত।

আমি হবো একনায়তন্ত্র
তোমার তিন কালের ইতিহাস।
স্বাধীনতা তুমি যদি চলে যাও, রক্ত হাতে করিবো শরাপ পান।
আমার জন্মভূমি আমাকে দিয়ো সাড়ে তিন হাত ভূমি।
না হয় কেড়ে নিবো তোমার সার্বভৌমত্ব।
ছিঁড়ে নিবো মানচিত্র।

Regards,
সুজন মাহমুদ | Sujanmahmud1@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

পল্লির কাজ || কবি আমিনুল হক

গল্প, কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ, রহস্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, গণিত, সাইকোলজি, হেলথ, মোটিভেশনাল ও বই রিভিউ লিখুন সাহিত্য কণিকায়।


কৃষকদের এত কষ্ট
আগে জানি নে,
রাত দিন পরিশ্রম করে
কষ্টে কাটায় সে।
জেলেরা মাছ ধরে
নদীর তীরে গিয়ে
তখন জেলে খুশি হয়
বড় মাছ উঠলে।
পল্লি গায়ের নৌকার মাঝি
গায় যে দেশের গান,
এমন গানে এমন সুরে
জুরায় সবার প্রাণ।
কুমার বানায় মাটির হাড়ি
করে কত সাজ,
মুচি করে জুতা সেলাই
নেই তো কোন লাজ।
কামার করে লোহার কাজ
বানায় কত কি,
নাপিত বলে আমরাই তো
সম্মানে থাকি।
পল্লি গায়ের মানবগুলি
করে নানান কাজ,
উৎসবে মেতে উঠে
করে সবাই সাজ।