কবিতা
"অবুঝ পৃথিবী"
কলমে - অমিতাভ মুখার্জী
২৮/০৬/২০১৯
পৃথিবীর বুকে মেতে যায় নির্মম মানুষেরা ।
ফালাফালা করে দেয় তার জঠর
বোমের আঘাতে !
কেঁদে ককিয়ে ওঠে যন্ত্রনায়
ফ্যালফ্যাল চেয়ে সহ্য করে
অবুঝ পৃথিবী...|
মাটির পাঁচ ফুটের নীচে
হাত বাড়ায় নগ্ন অলিন্দে
পৃথিবীর গোপন অঙ্গে
উঠে আসে নগ্ন কঙ্কাল
হাড়গড় থেকে ওঠে
আদিম পোকামাকড়
তাদের গায়ে হাত বোলায়
অবুঝ পৃথিবী ...|
ইতিহাস গড়ে সেইজনেরা ।
পৃথিবীর বুক খোঁড়ে ধারালো অস্ত্রে
নগ্নকায় হাত চালিয়ে তুলে আনে
প্রসবিত মৃত সন্তানের কাঠামো,
সাজিয়ে রাখে মিথ্যে আনন্দে
কাটা ছেঁড়া দেহে শুয়ে থাকে
অবুঝ পৃথিবী |
গোপন বুকের ভেতর হ'তে
উঠে আসে অমূল্য রতন ।
মানুষেরা যুদ্ধে মাতে মিথ্যে অধিকারে
নীল রক্তে ভেসে যায় পৃথিবীর দেহ ।
পিছলে যায় সত্যের পথ
হারিয়ে যায় আসল দেহ ।
জ্বলে উঠে নকল দেহের দর্প,
চোখের জলে ভাসে
অবুঝ পৃথিবী ...।
পৃথিবীর সৈনিকেরা যুদ্ধ করে
তাঁদের বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে
তুচ্ছ করে এগিয়ে আসে পৃথিবীকে বাঁচাবে বলে।
কিন্তু, কেউ হারে কেউ জিতে যায়
শত শত মৃতদেহ বুকে নিয়ে জেগে থাকে
অবুঝ পৃথিবী |
সেইসব সৈনিকদের মনে রাখেনা কেউ
পচতে থাকে তাদের স্মৃতি
অশান্ত জলের ঢেউ-এ
ভেসে যায় অজানা গহনে
তাদের পচা মৃতদেহ গুলো
ছিঁড়ে খায় পৃথিবীর হায়নারা
তারা বেঁচে থাকবে বলে,
ওদের কষ থেকে গড়িয়ে পড়ে রক্ত
হারগোড় গুলো শব্দ করে চিবোয়
চিবিয়ে চিবিয়ে ধুলো করে
সেই ধুলোয় শুয়ে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
আপন মনে খেলা করে প্রকৃতি
পৃথিবীর আদিম সন্তান এরা
ভারসাম্য থাকে ওদের হাসিখুশিতে
মনের সুখ সাচ্ছন্দ্যের আদরে
বাড়তে থাকে পৃথিবীর আয়ু
ওদের প্রশ্বাসে নিশ্বাস হয় বাতাস
ওদের অঙ্গে ঘর বাঁধে পৃথিবীর পাখিরা
শাবক থেকে পাখি হয় ওদের দোলনায় দুলে |
কাল বৈশাখীর কপট ঝড়ে আগলে রাখে তাদের
তবুও বাঁচে না -
আসে নির্মম রক্ত চোসা দল
তাদের হাতে থাকে নিষ্ঠুর কুঠার
কোপে কোপে জ্বলে ওঠে অট্টহাসি
কাটা অঙ্গ হতে ঝরে পড়ে রস রক্ত হয়ে|
পৃথিবীর বুকের অতলে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের চিন্হ নিয়ে
একটা সকালের দিনগোনে
অবুঝ পৃথিবী ...।
মাটি জল বাতাসে বেড়ে ওঠে মাটির দেহ
রূপসী বাংলা সেজে ওঠে আবার অপরুপা হয়ে |
বাংলার কৃষক ভরিয়ে তোলে সবুজ খেত
গাছের পাখি জাগিয়ে তোলে
সবুজ পাতা আর সুপ্ত কুঁড়িদের |
পুবের সূর্য মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে
হটাত নেমে আসে কালবৈশাখী -
এসব কে ভেঙ্গে খান খান করে মাটি চিরে জেগে ওঠে
জঞ্জাল ভর্তি এক মানুষ...
দাপিয়ে বেড়ায় সমস্ত পৃথিবী
তার চোখে থাকে কামাগ্নি আর মুখে বিনয়ের ভাব ।
কলুষ চামড়া ঢাকা থাকে দামী
কাপড়-পাঞ্জাবির আবরণে
চোখে চশমা আর হাতে মন্ত্রপূত তাবিজ
কোনো অসত সাংবাদিকের বিজ্ঞাপনে
কলুষ খোলস থেকে বেরিয়ে পড়ে
এই বিনয়ের অবতার
মোটা টাকার বিনিময়ে ..,
সে অনায়াসে মুখের ভেল্কিতে
ধরতে পারে বেকার দল
মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বন্ন্যায় ভাসিয়ে দিতে পারে
তাদের কুলহারা খরকুটোর মতো., তেমনি -
চোখের আগুনে পোড়াতে পারে নারীদেহ |
নারীযোনি হতে অনায়াসে বের করে
ছুঁড়ে দিতে পারে তাকে রাস্তায় বেজম্মার ভিড়ে...।
তারপর - চরচর করে বারে লাইন,
ওই বেজম্মার মা-গুলো সব গিয়ে
জড়ো হয় বেশ্যালয়ে |
রাতজাগা নিশাচরের মতো জেগে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
তার পড়ে ওই বেজম্মাগুলোকে
রাস্তা থেকে তুলে এনে একটা
পরিচয় দেয় তাদের -
কুখ্যাত অখ্যাত অমুক - তমুক
ওরা বেঁচে থাকে পায়ের তলায়
আর নেতাগুলো সব ওদের
ধেইয়ে দেয় অসামাজিক কাজে
বাম ডান সমস্ত দিক ...
নিজেদের গদি মজবুত করে
ওদের জীবনটাকে বাজি রেখে |
খুন জখম নারিধর্ষণ চুরি ডাকাতি
অপহরণ শেষে অনুশোচনায়
ভুগতে থাকে বেজম্মার বাচ্চাগুলো |
উলঙ্গ দেহে খুঁড়তে থাকে-
খুঁজতে থাকে সত্যিকার পরিচয়
ক্লান্ত অবসন্ন দেহে জেগে থাকে
তাদের নকল কাঠামোটা |
স্যাঁতস্যাঁতে অথচ নির্মম ।
একটা কালো কুতকুতে মেঘ
ওদের জীবনটাকে গ্রাস করে নেই
একটা বজ্রাঘাতের মতো পড়ে থাকে
কোনো ডাস্টবিনের ধরে
নেতার প্রয়োজন মিটে গেলে ।
পৃথিবীর পরিচিত শকুনেরা ওই
পরিচয়হীন বেজম্মার লাশগুলোকে
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় ; রক্তের স্বাদ
টকটকে জিভে তুলে টলতে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
সারা পৃথিবীতে লড়াই
বেঁচে থাকা আর অধিকারের লড়াই,
দুটোর সংগা এক হলেও
রক্ত ঝরে বুক থেকে পেটে।
অদৃশ্য অধিকারের গদী টলতে থাকে
আসন্ন পরিবর্তনের ঝড়ে ।
ক্ষুধার জন্তুটা রোষে ওঠে!
অকিঞ্চন উদরে, ঝরতে থাকে রক্ত |
জঠর থেকে ঠেলতে থাকে ভ্রুণটা |
সাদা কালো মানুষেরা কখনো
অপেক্ষা করে পরিবর্তন ।
আর্তনাদে চির ধরে সারা দেহে ,
দুর্ভিক্ষ উদরে ধুঁকতে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
অন্যদিকে আছে ধর্মের হাট-বাজার
সেখানে কেনাবেচা হয় ধর্ম নিয়ে
এ যেন এক জান্তব তান্তব
মন্দির-মসজিদগুলো সব
শিং বেঁকিয়ে গুঁতিয়ে বেড়ায়;
অধর্মচারীরা জালবোনে হাটে বেচবে বলে |
বণিকরা জাহাজ ভাসায় গভীর সমুদ্রে
আমদানি রপ্তানি হয়; নরম কে কঠিন করে
বাতাসে উড়ে অধর্মের অর্থ |
মাঝ দরিয়ায় অতলে নামে পৃথিবীর ডুবুরীরা
অতল থেকে তুলে আনে মনিমানিক্য; সোনালী মাছ ।
দেশের নিজস্ব রত্নরাজি চলে যায়
অপর দেশে কালো অর্থের বিনিময়ে |
সোনালী মাছ বন্দী থাকে
মনোরঞ্জনের কাঁচের জারে
নগ্নকায় পৃথিবীর দেহ ঢাকতে চায় অন্যজনে ।
স্বছ বস্ত্রের আবরণ উড়ে যায়
অধর্মের কালো বাতাসে
নগ্নকায় মাথা হেঁট
অবুঝ পৃথিবী ...।
থেমে যায় কবির কলম
ভেসে ওঠে সাদা পাতায় বৈশাখী সন্ধ্যা
বধুর শাঁখে কেঁপে ওঠে
কবির নরম হৃদয়
ডেকে যায় সন্ধ্যাপেঁচা
ঘরে ফেরে শুয়োরের বাচ্চা
কচুর গোঁড় গিলে;
ঘরে আসে মা লক্ষী |
পূর্নিমার চাঁদ কলঙ্কের মায়া কাটিয়ে
নেমে আসে সোনার বাংলায় |
এই সোনার বাংলার আনাচে কানাচে
তারাই ঘুরে বেড়ায়
নির্জনতার খোলসে ভরা থাকে
তাদের নির্মম কলুষতা
চুরি ডাকাতির অন্ধ কারাগারে কিম্বা
ধর্ষিতা রমনীর আঁচলে
বন্দী থাকে তাদের ঠিকানা ;
মদের বোতলে নাচে উন্মত্ত হিংস্রতা
ললাট রেখায় ফুটে ওঠে লোভের আগুন
সমাজে ওরাই কেউকেটা
ওরাই সমাজের হত্তা-কত্তা বিধাতা
রাজার পাশের আসনে থাকে
ওদের অগাধ অধিকার |
নৈতিক নিয়মে ছড়ি ঘরে
আমার - তোমার - তাহাদের মাথায় ।
ধেয়ে আসে জলের স্রোত
সত্যের আঁকি বুঁকি নির্মম প্রত্যুষ
হারিয়ে যায় গহন মিথ্যার অন্তরালে
কালো অন্ধকার নামে ঢেকে যায়প্রত্যুষ |
চারিদিকে শুধু অন্ধকার আরঅন্ধকার
সেই ঘন অন্ধকারে তুমি আমি সব্বাই অন্ধ
এক চিলতে আলো খুঁজি প্রত্যুষের
বন্যার স্রোতের মতো অন্ধকার কব্জা করেছে মানুষদের
যারা কালো চুরি করে তারাই আজপ্রত্যুষের শত্রু
কারণ...আলোর মুখোশে ভেসে যাবে তার আসল রূপ
ধুয়ে যাবে কালোর স্পর্শ
তুমি বা সে আমি বা আমরা সবাই
আলোর অপর বিশ্বাসী বলেই |
সমস্ত পৃথিবী ছেয়ে গেছে উগ্রপন্থীতে
বেসামাল আইনকানুন...প্রাণ ওস্ঠাগত হৃদকম্পন...!
তারই মাঝে রাজায় রাজায় কোলাকুলি
বেড়ে গেছে বিশৃঙ্খলা...বেজে গেছে রণ দামামা....।
কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে মুন্ডু .. মাংস .. হারগোর
শিরা..অস্তি..পেট..হৃদয়ের নরম মানবিকতা
স্থুল হয়ে গেছে বুদ্ধিজীবির বুদ্ধিমত্তা
লোপ পেয়েছে শিক্ষা দীক্ষা মানব জীবনের শ্রেষ্ঠত্ব।
তাইত একদল করে মিছিল একদল লোটে ক্ষমতা-
বাকিরা থাকে গোপনে তাদের হাতে থাকে
সত্যের চাবিকাঠি..নতুন দ্বারের অপেক্ষায় |
হাড় জিরজিরে বুকে থাকে গনগনে বিপ্লবী আগুন ।
পৃথিবীর পাদদেশে সৃষ্টি করতে চায়
নব জাগরণের উভুত্থান |
পৃথিবী গড়ছে ..গড়ছে সেই মানব মানবী বহুযুগ আগে...
শুরুতে যারা জন্মেছিল..ভেঙ্গে
আবার নতুন করে গড়তে বসেছে
অবুঝ পৃথিবী ...।
----------------------------------------------
©️ অমিতাভ মুখার্জী। পঃবঃ। ভারত।
Regards,
অমিতাভ মুখার্জী | mamitava1969@gmail.com
Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com
"অবুঝ পৃথিবী"
কলমে - অমিতাভ মুখার্জী
২৮/০৬/২০১৯
পৃথিবীর বুকে মেতে যায় নির্মম মানুষেরা ।
ফালাফালা করে দেয় তার জঠর
বোমের আঘাতে !
কেঁদে ককিয়ে ওঠে যন্ত্রনায়
ফ্যালফ্যাল চেয়ে সহ্য করে
অবুঝ পৃথিবী...|
মাটির পাঁচ ফুটের নীচে
হাত বাড়ায় নগ্ন অলিন্দে
পৃথিবীর গোপন অঙ্গে
উঠে আসে নগ্ন কঙ্কাল
হাড়গড় থেকে ওঠে
আদিম পোকামাকড়
তাদের গায়ে হাত বোলায়
অবুঝ পৃথিবী ...|
ইতিহাস গড়ে সেইজনেরা ।
পৃথিবীর বুক খোঁড়ে ধারালো অস্ত্রে
নগ্নকায় হাত চালিয়ে তুলে আনে
প্রসবিত মৃত সন্তানের কাঠামো,
সাজিয়ে রাখে মিথ্যে আনন্দে
কাটা ছেঁড়া দেহে শুয়ে থাকে
অবুঝ পৃথিবী |
গোপন বুকের ভেতর হ'তে
উঠে আসে অমূল্য রতন ।
মানুষেরা যুদ্ধে মাতে মিথ্যে অধিকারে
নীল রক্তে ভেসে যায় পৃথিবীর দেহ ।
পিছলে যায় সত্যের পথ
হারিয়ে যায় আসল দেহ ।
জ্বলে উঠে নকল দেহের দর্প,
চোখের জলে ভাসে
অবুঝ পৃথিবী ...।
পৃথিবীর সৈনিকেরা যুদ্ধ করে
তাঁদের বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে
তুচ্ছ করে এগিয়ে আসে পৃথিবীকে বাঁচাবে বলে।
কিন্তু, কেউ হারে কেউ জিতে যায়
শত শত মৃতদেহ বুকে নিয়ে জেগে থাকে
অবুঝ পৃথিবী |
সেইসব সৈনিকদের মনে রাখেনা কেউ
পচতে থাকে তাদের স্মৃতি
অশান্ত জলের ঢেউ-এ
ভেসে যায় অজানা গহনে
তাদের পচা মৃতদেহ গুলো
ছিঁড়ে খায় পৃথিবীর হায়নারা
তারা বেঁচে থাকবে বলে,
ওদের কষ থেকে গড়িয়ে পড়ে রক্ত
হারগোড় গুলো শব্দ করে চিবোয়
চিবিয়ে চিবিয়ে ধুলো করে
সেই ধুলোয় শুয়ে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
আপন মনে খেলা করে প্রকৃতি
পৃথিবীর আদিম সন্তান এরা
ভারসাম্য থাকে ওদের হাসিখুশিতে
মনের সুখ সাচ্ছন্দ্যের আদরে
বাড়তে থাকে পৃথিবীর আয়ু
ওদের প্রশ্বাসে নিশ্বাস হয় বাতাস
ওদের অঙ্গে ঘর বাঁধে পৃথিবীর পাখিরা
শাবক থেকে পাখি হয় ওদের দোলনায় দুলে |
কাল বৈশাখীর কপট ঝড়ে আগলে রাখে তাদের
তবুও বাঁচে না -
আসে নির্মম রক্ত চোসা দল
তাদের হাতে থাকে নিষ্ঠুর কুঠার
কোপে কোপে জ্বলে ওঠে অট্টহাসি
কাটা অঙ্গ হতে ঝরে পড়ে রস রক্ত হয়ে|
পৃথিবীর বুকের অতলে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের চিন্হ নিয়ে
একটা সকালের দিনগোনে
অবুঝ পৃথিবী ...।
মাটি জল বাতাসে বেড়ে ওঠে মাটির দেহ
রূপসী বাংলা সেজে ওঠে আবার অপরুপা হয়ে |
বাংলার কৃষক ভরিয়ে তোলে সবুজ খেত
গাছের পাখি জাগিয়ে তোলে
সবুজ পাতা আর সুপ্ত কুঁড়িদের |
পুবের সূর্য মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে
হটাত নেমে আসে কালবৈশাখী -
এসব কে ভেঙ্গে খান খান করে মাটি চিরে জেগে ওঠে
জঞ্জাল ভর্তি এক মানুষ...
দাপিয়ে বেড়ায় সমস্ত পৃথিবী
তার চোখে থাকে কামাগ্নি আর মুখে বিনয়ের ভাব ।
কলুষ চামড়া ঢাকা থাকে দামী
কাপড়-পাঞ্জাবির আবরণে
চোখে চশমা আর হাতে মন্ত্রপূত তাবিজ
কোনো অসত সাংবাদিকের বিজ্ঞাপনে
কলুষ খোলস থেকে বেরিয়ে পড়ে
এই বিনয়ের অবতার
মোটা টাকার বিনিময়ে ..,
সে অনায়াসে মুখের ভেল্কিতে
ধরতে পারে বেকার দল
মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বন্ন্যায় ভাসিয়ে দিতে পারে
তাদের কুলহারা খরকুটোর মতো., তেমনি -
চোখের আগুনে পোড়াতে পারে নারীদেহ |
নারীযোনি হতে অনায়াসে বের করে
ছুঁড়ে দিতে পারে তাকে রাস্তায় বেজম্মার ভিড়ে...।
তারপর - চরচর করে বারে লাইন,
ওই বেজম্মার মা-গুলো সব গিয়ে
জড়ো হয় বেশ্যালয়ে |
রাতজাগা নিশাচরের মতো জেগে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
তার পড়ে ওই বেজম্মাগুলোকে
রাস্তা থেকে তুলে এনে একটা
পরিচয় দেয় তাদের -
কুখ্যাত অখ্যাত অমুক - তমুক
ওরা বেঁচে থাকে পায়ের তলায়
আর নেতাগুলো সব ওদের
ধেইয়ে দেয় অসামাজিক কাজে
বাম ডান সমস্ত দিক ...
নিজেদের গদি মজবুত করে
ওদের জীবনটাকে বাজি রেখে |
খুন জখম নারিধর্ষণ চুরি ডাকাতি
অপহরণ শেষে অনুশোচনায়
ভুগতে থাকে বেজম্মার বাচ্চাগুলো |
উলঙ্গ দেহে খুঁড়তে থাকে-
খুঁজতে থাকে সত্যিকার পরিচয়
ক্লান্ত অবসন্ন দেহে জেগে থাকে
তাদের নকল কাঠামোটা |
স্যাঁতস্যাঁতে অথচ নির্মম ।
একটা কালো কুতকুতে মেঘ
ওদের জীবনটাকে গ্রাস করে নেই
একটা বজ্রাঘাতের মতো পড়ে থাকে
কোনো ডাস্টবিনের ধরে
নেতার প্রয়োজন মিটে গেলে ।
পৃথিবীর পরিচিত শকুনেরা ওই
পরিচয়হীন বেজম্মার লাশগুলোকে
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায় ; রক্তের স্বাদ
টকটকে জিভে তুলে টলতে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
সারা পৃথিবীতে লড়াই
বেঁচে থাকা আর অধিকারের লড়াই,
দুটোর সংগা এক হলেও
রক্ত ঝরে বুক থেকে পেটে।
অদৃশ্য অধিকারের গদী টলতে থাকে
আসন্ন পরিবর্তনের ঝড়ে ।
ক্ষুধার জন্তুটা রোষে ওঠে!
অকিঞ্চন উদরে, ঝরতে থাকে রক্ত |
জঠর থেকে ঠেলতে থাকে ভ্রুণটা |
সাদা কালো মানুষেরা কখনো
অপেক্ষা করে পরিবর্তন ।
আর্তনাদে চির ধরে সারা দেহে ,
দুর্ভিক্ষ উদরে ধুঁকতে থাকে
অবুঝ পৃথিবী ...।
অন্যদিকে আছে ধর্মের হাট-বাজার
সেখানে কেনাবেচা হয় ধর্ম নিয়ে
এ যেন এক জান্তব তান্তব
মন্দির-মসজিদগুলো সব
শিং বেঁকিয়ে গুঁতিয়ে বেড়ায়;
অধর্মচারীরা জালবোনে হাটে বেচবে বলে |
বণিকরা জাহাজ ভাসায় গভীর সমুদ্রে
আমদানি রপ্তানি হয়; নরম কে কঠিন করে
বাতাসে উড়ে অধর্মের অর্থ |
মাঝ দরিয়ায় অতলে নামে পৃথিবীর ডুবুরীরা
অতল থেকে তুলে আনে মনিমানিক্য; সোনালী মাছ ।
দেশের নিজস্ব রত্নরাজি চলে যায়
অপর দেশে কালো অর্থের বিনিময়ে |
সোনালী মাছ বন্দী থাকে
মনোরঞ্জনের কাঁচের জারে
নগ্নকায় পৃথিবীর দেহ ঢাকতে চায় অন্যজনে ।
স্বছ বস্ত্রের আবরণ উড়ে যায়
অধর্মের কালো বাতাসে
নগ্নকায় মাথা হেঁট
অবুঝ পৃথিবী ...।
থেমে যায় কবির কলম
ভেসে ওঠে সাদা পাতায় বৈশাখী সন্ধ্যা
বধুর শাঁখে কেঁপে ওঠে
কবির নরম হৃদয়
ডেকে যায় সন্ধ্যাপেঁচা
ঘরে ফেরে শুয়োরের বাচ্চা
কচুর গোঁড় গিলে;
ঘরে আসে মা লক্ষী |
পূর্নিমার চাঁদ কলঙ্কের মায়া কাটিয়ে
নেমে আসে সোনার বাংলায় |
এই সোনার বাংলার আনাচে কানাচে
তারাই ঘুরে বেড়ায়
নির্জনতার খোলসে ভরা থাকে
তাদের নির্মম কলুষতা
চুরি ডাকাতির অন্ধ কারাগারে কিম্বা
ধর্ষিতা রমনীর আঁচলে
বন্দী থাকে তাদের ঠিকানা ;
মদের বোতলে নাচে উন্মত্ত হিংস্রতা
ললাট রেখায় ফুটে ওঠে লোভের আগুন
সমাজে ওরাই কেউকেটা
ওরাই সমাজের হত্তা-কত্তা বিধাতা
রাজার পাশের আসনে থাকে
ওদের অগাধ অধিকার |
নৈতিক নিয়মে ছড়ি ঘরে
আমার - তোমার - তাহাদের মাথায় ।
ধেয়ে আসে জলের স্রোত
সত্যের আঁকি বুঁকি নির্মম প্রত্যুষ
হারিয়ে যায় গহন মিথ্যার অন্তরালে
কালো অন্ধকার নামে ঢেকে যায়প্রত্যুষ |
চারিদিকে শুধু অন্ধকার আরঅন্ধকার
সেই ঘন অন্ধকারে তুমি আমি সব্বাই অন্ধ
এক চিলতে আলো খুঁজি প্রত্যুষের
বন্যার স্রোতের মতো অন্ধকার কব্জা করেছে মানুষদের
যারা কালো চুরি করে তারাই আজপ্রত্যুষের শত্রু
কারণ...আলোর মুখোশে ভেসে যাবে তার আসল রূপ
ধুয়ে যাবে কালোর স্পর্শ
তুমি বা সে আমি বা আমরা সবাই
আলোর অপর বিশ্বাসী বলেই |
সমস্ত পৃথিবী ছেয়ে গেছে উগ্রপন্থীতে
বেসামাল আইনকানুন...প্রাণ ওস্ঠাগত হৃদকম্পন...!
তারই মাঝে রাজায় রাজায় কোলাকুলি
বেড়ে গেছে বিশৃঙ্খলা...বেজে গেছে রণ দামামা....।
কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে মুন্ডু .. মাংস .. হারগোর
শিরা..অস্তি..পেট..হৃদয়ের নরম মানবিকতা
স্থুল হয়ে গেছে বুদ্ধিজীবির বুদ্ধিমত্তা
লোপ পেয়েছে শিক্ষা দীক্ষা মানব জীবনের শ্রেষ্ঠত্ব।
তাইত একদল করে মিছিল একদল লোটে ক্ষমতা-
বাকিরা থাকে গোপনে তাদের হাতে থাকে
সত্যের চাবিকাঠি..নতুন দ্বারের অপেক্ষায় |
হাড় জিরজিরে বুকে থাকে গনগনে বিপ্লবী আগুন ।
পৃথিবীর পাদদেশে সৃষ্টি করতে চায়
নব জাগরণের উভুত্থান |
পৃথিবী গড়ছে ..গড়ছে সেই মানব মানবী বহুযুগ আগে...
শুরুতে যারা জন্মেছিল..ভেঙ্গে
আবার নতুন করে গড়তে বসেছে
অবুঝ পৃথিবী ...।
----------------------------------------------
©️ অমিতাভ মুখার্জী। পঃবঃ। ভারত।
Regards,
অমিতাভ মুখার্জী | mamitava1969@gmail.com
Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com