আপনার লেখা গল্প কিংবা কবিতাটি পোস্ট করুন এখানে। মেসেজ বক্সে লেখার শিরোনাম, লেখকের নামসহ লিখা দিন।

Name

Email *

Message *

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

পড় কী আমার কবিতা ?
আশরাফুল মুহাম্মদ


"এই তুমি ! পড়ছো কী বসে আমার কবিতা ?
লাগছে বলো কতটুকু ভালো পড়তে তোমার কথা । "
মুখেই তার জ্বলছে হাসি
সে আবডালে বলছে মোরে ভালোবাসি ।
বুঝেছি তার মনের ভাষা
ভালোবাসা ।
একটু পরে কবিতাটি স্পর্শ করে
বলে দিলো তার উত্তরে
" পড়ছি তোমার কলমের যাদু
লাগছে যে তা ভীষণ মধু,
কোন ভাষায় বলবো তোমায়
শব্দগুলো বারবার হারায় । "
অদৃষ্টিতে দেখি তাকে শুনি কথা চারদিকে তার
দেখা হয়না আগের মতো প্রতিবার
যখন পড়ে,
প্রশ্ন করি কবিতায় তারে
" আজো তোমার মনে পড়ে
তোমার মন কি এখনও খুঁজে মোরে । "
অশ্রুভেজা চোখে বলে কবিতার-ই সাথে কথা
" আমার বুকে বইছে একটু আলো স্নিগ্ধতা
সেই আলোর মাঝে তুমি আর তোমার কবিতা
বাকিটাতে মিশে গেছে কালো ব্যর্থতা । "
আকাশ দেশে হারাই আমি
কবিতায় করি যত শত পাগলামি ।
লিখি শুধু
কিন্তু লেখায় থাকে না সেই মিষ্টি মধু ।
মনটা ভরে নিয়ে আছে একগাদা জ্বালা
সাদা নয় সে ভীষণ কালা ।
কালো মনে লিখি তাকে
" কী করে তুমি ভুলে গেলে এই আমাকে ? "
পড়ে পড়ে করে পড়ে না
এই কবিতা,
দেখতে নারি তার কান্না আর চোখের জল
বুঝে গেছি ছিলাম না তার সম্বল ।

Regards,
আশরাফুল মুহাম্মদ | ashrafulmd20020402@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

কবিতা

নির্যাতিত

নির্যাতিত হচ্ছে নারী,নির্যাতিত মন
নির্যাতনের কবলে শিশু,কিশোর- কিশোরী
সমাজ পুরোটা এখন !

ঘুমিয়ে আছে বিবেক,বুদ্ধি
আইন-আদালত ,
ঘুমিয়ে আছে সুশীল সমাজ,
জাগ্রত রং মহল ।

বিবেক কাউকে দেয় না হানা,
নিরীহ মানুষের জীবন দোটানা ।

চাইলেও অনেকে করতে পারে না,
জীবন যুদ্ধে লড়তে পারে না ।
মুখ বুজে সইতে হয় কত না জখম,
স্তব্ধতায় লুটিয়ে পড়ে মানুষের সদ্-গুণ !

Regards,
রোজিনা রোজি | rojinaroji217@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

কবিতা

কথা
-মেহেদী সুমন

সব কথা ফুরিয়ে গেলে
আমরা আবার নতুন টানি,
কথার মাঝে হাসি
তবে কথার মাঝেই কাঁদি।
কথার মাঝে হারায় যা
মন দিয়ে তা খুঁজি।

Regards,
মেহেদী সুমন | mehedisumon20bd@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

কবিতা

চিরদিনের
ড.মহীতোষ গায়েন
--------------
একদিন সব বিবাদের মীমাংসা হবে,
সব রাগ জল হবে একদিন-
জলপরী এসে বলবে:'বেহেস্তে যাবে?'

একদিন জিন্দাপির এসে বলবে:
যত পার পাপ করে নাও
আমিতো আছি‌।

আমি তো আছি,সব বাহাদুর বলে
আমিই সব,আমিতো আছি,
আমি মানে তো সর্বনাশা ঘূর্ণিপাক।

তমসাবৃত বেহেস্তে সব চালবাজরা
ফূর্তি করে,রাজা এবং প্রজার টাকায়
রাজা মানে তো প্রজার শুধু রক্তশোষা

শোষণ! দেখ চারিদিকে হচ্ছে অবিরত
এক শিয়াল ডাকলে পরে
সব শিয়ালের হুঙ্কখ হুয়া।

হুঙ্কাহুয়া ডাকা মানেই বেজায় বিপাক
বেজায় বিপাক হচ্ছে বলেই
ছল চাতুরী, বিচ্ছিরি সব।

----------------------
ড.মহীতোষ গায়েন, অধ্যাপক, সিটি কলেজ,১০২/১রাজা রাম মোহন সরণি,কলকাতা-৯
৯০ দশকের কবি।৪টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত।চান্দ্রভাষ ও নতুন বাংলা পুরষ্কার
প্রাপ্ত। এছাড়া কবিতার জন্যে বহু সম্মাননা লাভ। গবেষক ও প্রাবন্ধিক।
ইমেল-g.mahitosh@yahoo.com
ফোন-০৭৭৯৭৫৫১৪০৫

Regards,
ড.মহীতোষ গায়েন | g.mahitosh68@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

কবিতা :: স্মরণ
কবি :: রঞ্জন ভট্টাচার্য
স্মরণ
রঞ্জন ভট্টাচার্য, ব্যারাকপুর।
তারিখ :: ২২শে শ্রাবন

তোমার চরণে আশ্রিত আমি
হে মহাপ্রাণ অন্তর্যামী
বিধির লেখায়
শ্রাবণ ধারায়
বারে বারে এসো তুমি ।
মহীরুহ তুমি এ পীঠভূমে
তোমার চরণ দিকে-দিকে চুমে
তোমার স্পর্শে
মনের হর্ষে
নিশিদিন তব নমি

*"*""""""""""""""""""""""""""""""""*"*

Regards,
রঞ্জন ভট্টাচার্য, ব্যারাকপুর | bhattacharya.ranjan@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

।।
বিষয় - পত্রসাহিত‍্য
পত্র নং - এক
শিরোনাম - বিষাদে সুখানুভব
লেখায় - প্রভাত মণ্ডল


[ইংরেজি ২০২০ সালে এসেও মানুষ জাত-পাত ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ।ব‍্যস্ত পৃথিবী
জুড়ে ভালোবাসা নামক অকৃত্রিম অনুভূতি লুপ্ত হতে বসেছে।এখন ভালোবাসা শুধু যেন
পন‍্য, শারীরিক সৌন্দর্যের বিলাস আর যৌনতায় পরিপূর্ণ।তবুও কিছু ভালোবাসা আছে
যা আজও অমলিন, নিষ্পাপ।তবুও সমাজ আর পরিবারের চাপে পড়ে এই ভালোবাসা পূর্ণতা
পায় না।বড় হয়ে ওঠে জাত,ধর্ম,শারীরিক গঠন,রঙ,সৌন্দর্যবোধ সর্বপরি অর্থ।এ
পত্রখানি সেই অপূর্ণ থেকে যাওয়া এক প্রেমিক-প্রেমিকার জীবনের শেষ পর্যায়ের
ব‍্যাথাতুর সুখানুভূতি।পত্রটি এমনভাবে লিখলাম যা প্রেমিক কিংবা প্রমিকা উভয়ের
ক্ষেত্রেই বাস্তবে ঘটে থাকে।]



প্রিয় প্রভাত/প্রভাতী,

অনেকটা দিন পেরিয়ে এসেছি,অনেকটা পথ,কয়েকটা বছর।তুমি আজ লক্ষ
আলোকবর্ষ দূরে।কোন অভিযোগ নেই আমার তোমাকে ঘিরে।তবু এই চিঠি লেখা।নাইবা
পৌঁছালো তোমার কাছে।এ চিঠি লেখা শেষ হলে কাগজের নৌকা বানিয়ে বৃষ্টির জলে
ভাসিয়ে দেব।হ‍্যাঁ সেই বৃষ্টি, যা রোজ আমার দু-চোখ থেকে ঝরে পড়ে চোখের কোন
বেয়ে,বুক ভাসিয়ে দেয়।তবুও কোন অভিযোগ নেই, কেন জান?আমি তো অচেনা পথিক তোমার
চলার পথে,আমি তো দুদিনের অতিথি তোমার হৃদয় সংসারে, আমি তো ভেসে যাওয়া খড়কুটো
তোমার বিস্তীর্ণ নদীবক্ষে।

জান!প্রতিটা দিন সেই কাকভোরে উঠে শিউলি তলায় দাঁড়িয়ে পূবাকাশে তাকিয়ে
থাকি।ঝরে যাওয়া শিউলির গন্ধ হৃদয়ে প্রশান্তি আনে।মাধবীলতার মালা গাঁথি
রোজ,তুমি আসবে বলে।এখানেই তো দাঁড়িয়ে চোখে চোখ আর হাতে হাত রেখে শেষ দেখার
দিনে তুমি বলেছিলে -
চলোনা হারিয়ে যায় ওই সূর্যের দেশে,জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
যেখানে সমাজ আমাদের পোড়াবে না,বলবেনা নির্লজ্জ বেহায়া; তোমার পরিবারও করবেনা
জাত বিচার।শুধু!শুধু ছুঁয়ে যাব মন দুজনে দুজনার।একটা পবিত্র ভালোবাসা।নিখিল
বিশ্ব জুড়ে লেখা হবে নাম,হবে ভালোবাসারই জয়গান।

আজও নিস্তব্ধ দুপুরে কিংবা মন খারাপের গোধূলি বেলায়, শুধু কানে
বাজে তোমার ঝংকার তোলা হাসি।যেন পাহাড় থেকে ঝরনার জল কলকল তানে প্রবাহিত হচ্ছে।
যেন কোন কিশোরীর পায়ের নুপুর রিনিঝিনি শব্দ তুলছে বাতাসে।অসীম দিগন্ত জুড়ে সে
কি আলোক উদ্ভাস চারিদিকে!চোখ জুড়িয়ে যায়।ধীরে ধীরে সন্ধ‍্যা নামে।

হ‍্যাঁ, আজ জীবন সন্ধ্যা নেমেছে।সকাল পেরিয়ে দুপুর,দুপুর পেরিয়ে
বিকাল,আজ বিকাল পেরিয়ে সন্ধ‍্যা।মাধবীলতার সেই মালাটাও শুকিয়ে গেছে,ঝরা শিউলি
বাতাসে উড়ে গেছে বহুদূর।সুদীর্ঘ পথ পেরিয়েও আজ শুধু তোমার জন‍্য অপেক্ষা।যদি
একবার দেখা হত,তোমার হাতে হাত আর চোখে চোখ রেখে বলতাম - সূর্য নয় চলো চিতার
আগুনে পুড়ি একসাথে।আমাদের ছাই উড়ে যাক সমগ্ৰ পৃথিবীর বুকে।লেখা হোক নাম এক
অদৃশ্য অক্ষরে।শুধু একসাথে বলি ---

আমাদের দেখা হবে পৃথিবীর ওই পারে
আমাদের দেখা হবে জাত পাত শেষে,
আমাদের কথা হবে চুপিচুপি কানে কানে
আমাদের ভালোবাসা অক্ষয় হবে।



ইতি,

প্রভাত মণ্ডল
আংরাইল,উত্তর ২৪
পরগনা

তারিখ -- ২৮/০৭/২০২০



____________________________

Regards,
প্রভাত মণ্ডল (Probhat Mondal) | probhatmondal00@gmail.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
https://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

সান্ত্বনা
সান্ত্বনা

চিত্ত-কুঁড়ি-হাসনাহেনা মৃত্যু-সাঁঝে ফুটল গো!
জীবন-বেড়ার আড়াল ছাপি বুকের সুবাস টুটল গো!
এই তো কারার প্রাকার টুটে
বন্দি এল বাইরে ছুটে,
তাই তো নিখিল আকুল-হৃদয় শ্মশান-মাঝে জুটল গো!
ভবন-ভাঙা আলোর শিখায় ভুবন রেঙে উঠল গো।



স্ব-রাজ দলের চিত্তকমল লুটল বিশ্বরাজের পায়,
দলের চিত্ত উঠল ফুটে শতদলের শ্বেত আভায়।
রূপের কুমার আজকে দোলে
অপরূপের শিশ-মহলে,
মৃত্যু-বাসুদেবের কোলে কারার কেশব ওই গো যায়,
অনাগত বৃন্দাবনে মা যশোদা শাঁখ বাজায়!



আজকে রাতে যে ঘুমুল, কালকে প্রাতে জাগবে সে।
এই বিদায়ের অস্ত-আঁধার উদয়-উষায় রাঙবে রে!
শোকের নিশির শিশির ঝরে,
ফলবে ফসল ঘরে-ঘরে,
আবার শীতের রিক্ত শাখায় লাগবে ফুলেল রাগ এসে।
যে মা সাঁঝে ঘুম পাড়াল, চুম দিয়ে ঘুম ভাঙবে সে।



না ঝরলে তাঁর প্রাণ-সাগরে মৃত্যু-রাতের হিম-কণা
জীবন-শুক্তি ব্যর্থ হত, মুক্তি-মুক্তা ফলত না।
নিখিল-আঁখির ঝিনুক-মাঝে
অশ্রু-মানিক ঝলত না যে!
রোদের উনুন না নিবিলে চাঁদের সুধা গলত না।
গগন-লোকে আকাশ-বধূর সন্ধ্যা-প্রদীপ জ্বলত না।



মরা বাঁশে বাজবে বাঁশি, কাটুক না আজ কুঠার তায়,
এই বেণুতেই ব্রজের বাঁশি হয়তো বাজবে এই হেথায়।
হয়তো এবার মিলন-রাসে
বংশীধারী আসবে পাশে
চিত্ত-চিতার ছাই মেখে শিব সৃষ্টি-বিষাণ ওই বাজায়।
জন্ম নেবে মেহেদি-ঈশা ধরার বিপুল এই ব্যথায়।



কর্মে যদি বিরাম না রয়, শান্তি তবে আসত না!
ফলবে ফসল – নইলে নিখিল নয়ন-নীরে ভাসত না।
নেইকো দেহের খোসার মায়া,
বীজ আনে তাই তরুর ছায়া,
আবার যদি না জন্মাত, মৃত্যুতে সে হাসত না।
আসবে আবার – নইলে ধরায় এমন ভালো বাসত না!

হুগলি
১৬ই আষাঢ় ১৩৩২

Regards,
Publisher@alibaba.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
http://sahityokonika.blogspot.com

[সাহিত্য কণিকা] New message received.

ধূমকেতু
কাজী নজরুল ইসলাম

আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু এই স্রষ্টার শনি মহাকাল
ধূমকেতু! সাত সাতশো নরক-জ্বালা জলে মম ললাটে, মম ধূম-কুণ্ডুলি করেছে শিবের
ত্রিনয়ন ঘর ঘোলাটে! আমি অশিব তিক্ত অভিশাপ, আমি স্রষ্টার বুকে সৃষ্টি-পাপের
অনুতাপ-তাপ-হাহাকার– আর মর্তে সাহারা-গোবি-ছাপ, আমি অশিব তিক্ত অভিশাপ! আমি
সর্বনাশের ঝাণ্ডা উড়ায়ে বোঁও বোঁও ঘুরি শূন্যে, আমি বিষ-ধূম-বাণ হানি একা ঘিরে
ভগবান-অভিমুন্যে। শোঁও শন-নন-নন-শন-নন-নন শাঁই শাঁই, ঘুর্ পাক্ খাই, ধাই পাঁই
পাঁই মম পুচ্ছে জড়ায়ে সৃষ্টি; করি উল্কা-অশনি-বৃষ্টি,– আমি একটা বিশ্ব
গ্রাসিয়াছি, পারি গ্রাসিতে এখনো ত্রিশটি। আমি অপঘাত দুর্দৈব রে আমি সৃষ্টির
অনাসৃষ্টি! আমি আপনার বিষ-জ্বালা-মদ-পিয়া মোচড় খাইয়া খাইয়া জোর বুঁদ হয়ে আমি
চলেছি ধাইয়া ভাইয়া! শুনি মম বিষাক্ত 'রিরিরিরি'-নাদ শোনায় দ্বিরেফ-গুঞ্জন সম
বিশ্ব-ঘোরার প্রণব-নিনাদ! ধূর্জটি-শিখ করাল পুচ্ছে দশ অবতারে বেঁধে ঝ্যাঁটা
করে ঘুরাই উচ্চে, ঘুরাই– আমি অগ্নি-কেতন উড়াই!– আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি
পুন মহাবিপ্লব হেতু এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু! ঐ বামন বিধি সে আমারে
ধরিতে বাড়ায়েছিল রে হাত মম অগ্নি-দাহনে জ্বলে পুড়ে তাই ঠুঁটো সে জগন্নাথ! আমি
জানি জানি ঐ স্রষ্টার ফাঁকি, সৃষ্টির ঐ চাতুরী, তাই বিধি ও নিয়মে লাথি মেরে,
ঠুকি বিধাতার বুকে হাতুড়ি। আমি জানি জানি ঐ ভুয়ো ঈশ্বর দিয়ে যা হয়নি হবে তাও!
তাই বিপ্লব আনি বিদ্রোহ করি, নেচে নেচে দিই গোঁফে তাও! তোর নিযুত নরকে ফুঁ
দিয়ে নিবাই, মৃত্যুর মুখে থুথু দি! আর যে যত রাগে রে তারে তত কাল্-আগুনের
কাতুকুতু দি। মম তূরীয় লোকের তির্যক্ গতি তূর্য গাজন বাজায় মম বিষ নিশ্বাসে
মারীভয় হানে অরাজক যত রাজায়! কচি শিশু-রসনায় ধানি-লঙ্কার পোড়া ঝাল আর বন্ধ
কারায় গন্ধক ধোঁয়া, এসিড, পটাশ, মোন্‌ছাল, আর কাঁচা কলিজায় পচা ঘা'র সম
সৃষ্টিরে আমি দাহ করি আর স্রষ্টারে আমি চুষে খাই! পেলে বাহান্ন-শও জাহান্নমেও
আধা চুমুকে সে শুষে যাই! আমি যুগে যুগে আসি আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু– এই
স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু! আমি শি শি শি প্রলয়-শিশ্ দিয়ে ঘুরি কৃতঘ্নী ঐ
বিশ্বমাতার শোকাগ্নি, আমি ত্রিভুবন তার পোড়ায়ে মারিয়া আমিই করিব মুখাগ্নি! তাই
আমি ঘোর তিক্ত সুখে রে, একপাক ঘুরে বোঁও করে ফের দু'পাক নি! কৃতঘ্নী আমি
কৃতঘ্নী ঐ বিশ্বমাতার শোকাগ্নি! পঞ্জর মম খর্পরে জ্বলে নিদারুণ যেই বৈশ্বানর–
শোন্ রে মর, শোন্ অমর!– সে যে তোদের ঐ বিশ্বপিতার চিতা! এ চিতাগ্নিতে জগদীশ্বর
পুড়ে ছাই হবে, হে সৃষ্টি জানো কি তা? কি বলো? কি বলো? ফের বলো ভাই আমি
শয়তান-মিতা! হো হো ভগবানে আমি পোড়াব বলিয়া জ্বালায়েছি বুকে চিতা! ছোট শন শন শন
ঘর ঘর সাঁই সাঁই! ছোট পাঁই পাঁই! তুই অভিশাপ তুই শয়তান তোর অনন্তকাল পরমাই!
ওরে ভয় নাই তোর মার নাই!! তুই প্রলয়ঙ্কর ধূমকেতু, তুই উগ্র ক্ষিপ্ত
তেজ-মরীচিকা ন'স্ অমরার ঘুম-সেতু তুই ভৈরব ভয় ধূমকেতু! আমি যুগে যুগে আসি
আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু ! ঐ ঈশ্বর-শির
উল্লজ্ঘিতে আমি আগুনের সিঁড়ি, আমি বসিব বলিয়া পেতেছে ভবানী ব্রহ্মার বুকে
পিঁড়ি ! খ্যাপা মহেশের বিক্ষিপ্ত পিনাক, দেবরাজ-দম্ভোলি লোকে বলে মোরে, শুনে
হাসি আমি আর নাচি বব-বম্ বলি ! এই শিখায় আমার নিযুত ত্রিশূল বাশুলি বজ্র-ছড়ি
ওরে ছড়ানো রয়েছে, কত যায় গড়াগড়ি ! মহা সিংহাসনে সে কাঁপিছে বিশ্ব-সম্রাট
নিরবধি, তার ললাট তপ্ত অভিশাপ-ছাপ এঁকে দিই আমি যদি ! তাই টিটকিরি দিয়ে হাহা
হেসে উঠি, আমি বাজাই আকাশে তালি দিয়া 'তাতা-উর্-তাক্' আর সোঁও সোঁও করে প্যাঁচ
দিয়ে খাই চিলে-ঘুড়ি সম ঘুরপাক! মম নিশাস আভাসে অগ্নি-গিরির বুক ফেটে ওঠে
ঘুৎকার আর পুচ্ছে আমার কোটি নাগ-শিশু উদ্গারে বিষ-ফুৎকার! কাল বাঘিনী যেমন
ধরিয়া শিকার তখনি রক্ত শোষে না রে তার, দৃষ্টি-সীমায় রাখিয়া তাহারে
উগ্রচণ্ড-সুখে পুচ্ছ সাপটি খেলা করে আর শিকার মরে সে ধুঁকে! তেমনি করিয়া
ভগবানে আমি দৃষ্টি-সীমায় রাখি দিবাযামী ঘিরিয়া ঘিরিয়া খেলিতেছি খেলা, হাসি
পিশাচের হাসি এই অগ্নি-বাঘিনী আমি যে সর্বনাশী! আজ রক্ত-মাতাল উল্লাসে মাতি
রে– মম পুচ্ছে ঠিকরে দশগুণ ভাতি, রক্ত রুদ্র উল্লাসে মাতি রে! ভগবান? সে তো
হাতের শিকার!– মুখে ফেনা উঠে মরে! ভয়ে কাঁপিছে, কখন পড়ি গিয়া তার আহত
বুকের 'পরে! অথবা যেন রে অসহায় এক শিশুরে ঘিরিয়া অজগর কাল-কেউটে সে কোন ফিরিয়া
ফিরিয়া চায়, আর ঘোরে শন্‌ শন্ শন্, ভয়-বিহ্বল শিশু তার মাঝে কাঁপে রে যেমন–
তেমনি করিয়া ভগবানে ঘিরে ধূমকেতু-কালনাগ অভিশাপ ছুটে চলেছি রে, আর সাপে-ঘেরা
অসহায় শিশু সম বিধাতা তাদের কাঁপিছে রুদ্র ঘূর্ণির মাঝে মম! আজিও ব্যথিত
সৃষ্টির বুকে ভগবান কাঁদে ত্রাসে, স্রষ্টার চেয়ে সৃষ্টি পাছে বা বড় হয়ে তারে
গ্রাসে!



Regards,
Publisher@alibaba.com

Note: This email was sent via the Contact Form gadget on
http://sahityokonika.blogspot.com